Tuesday 27 February 2018

পবিত্র আত্মা (ছোট গল্প)


পবিত্র আত্মা

বিট্টু বৈদ্য


আজ ক্লাবে আড্ডা মারতে একটু বেশী দেরি হয়ে গেলদৌড়ালাম বাড়ির দিকে। সন্ধ্যে পার হয়ে গেছে। সবাই বারন করল, তবুও তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য ওই রাস্থাটাই বেছে নিলাম। রাস্তাটার একটা বদনাম ছিল। দুটো উঁচু পাঁচিলের মাঝে এই রাস্তাটা। একটা পাঁচিল চার্চ কে ঘিরে রেখেছে আর অন্যটা একটা কবরস্তানকে। রাস্তাটায় কিছুটা গেছি পেছন থেকে একটা ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়লাম। একজন পাদ্রি আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার প্রশ্ন করলেন, “ এই আন্ধকারে তুমি এই রাস্তায় এলে কেন?”
“ কেন? এই রাস্থায় কি আছে যে যাব না?”
“ সব জেনেও আমায় জিজ্জাসা করছ।”
“ আমি ভূত বিশ্বাস করিনা। আর আপনি এলেন কি ভাবে? ভয় করল না?”
অন্ধকারে দুজন রাস্তাদিয়ে হাঁটতে আরাম্ভ করলাম। পাদ্রি সাদা পোশাক পরে আছেন। মাথায় একটা টুপি গলায় একটা মালা। হাতে একটা বই। মনে হল বাইবেল। ওনাকে পাশে পেয়ে সাহস একটু বাড়ল। পাদ্রি ভদ্রলোক বললেন, “ আমার সাথে আমার যীশু সবসময় থাকেন। তাই ভয় পাই না”। একটু চুপ করে থেকে আবার বললেন, “ তুমি ঈশ্বর বিশ্বাস কর”?
“ হ্যাঁ করি”।
“ কেন কর তাকেও তো দেখনি। যদি তুমি ঈশ্বর বিশ্বাস কর, তাহলে ভূতও তোমায় বিশ্বাস করতে হবে। চল তোমায় একটা জিনিস দেখাই”।
“ আজ দেখতে পারব না। বাড়িতে তাড়াতাড়ি না ঢুকলে বাবা মেরে ঠ্যাঙ খোঁড়া করে দেবে”
“ চিন্তা কর না। কেউ কিছু বলবে না। এটা সবসময় সঙ্গে রেখ। যীশু তোমায় সাহায্য করবে” এই বলে ওনার গলার মালাটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন। আমি হিন্দু তবুও মনের মধ্যে একটা ভক্তি ও বিশ্বাস জন্মাল। সেটা হাতে নিয়ে চললাম, ওনার পেছন পেছন। রাস্থাটা পার করে ডানদিকে রাস্তা ধরলে চার্চের দরজা আর আমাদের বাড়ির রাস্তা। কিন্তু আমরা ধরলাম বাম দিকেরটা। সেটা কুবরস্থানের ঢোকার রাস্থা। আমরা সেদিকে দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করলাম। একটা নিদিষ্ট কবরে সামনে দাঁড়িয়ে আমায় বললেন, “ এখানে যাই দেখনা কেন একটুও ভয় পাবে না। পুরটাই আমার হাতের মধ্যে থাকবে। কোন বিপদ তোমার হবে না”। এবার কবররে দিকে মুখ করে বললেন, “ উঠে এসো পল। আমি এসেছি”। এর পর যে দৃশ্য আমি দেখলাম তাতে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না। দেখলাম একটা কঙ্ককাল কবরে উপর এসে বসলো। তার  মাংসতো নেই এমনকি হাড়ও প্রায় খয়ে যেতে আরাম্ভ করেছে। আমি প্রায় ভয়ে অজ্ঞান হয়ে জাছিলা। আমার চোখ পড়ল পাদ্রির চোখে। দেখলাম উনি চোখ দিয়ে বুঝিয়ে দিলে “ তোর কোন ভয় নেই, আমি আছি”। ভয়টা কোথায় উড়ে গেল। তারপর শুনতে পেলাম সেই পাদ্রির বাইবেল পাঠ। কতক্ষন চলল বুজতে পারলাম না। একসময় দেখলাম কঙ্কালটা আসতে আসতে কবরের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। আমার চেতনা ফিরল। পাদ্রিকে বিষয়টা কি জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, “ তুমি যাকে কবরে দেখলে ওটা আমর শরীর আর আমি ওর আত্মা। ওকে সপ্তাহে একদিন করে এসে বাইবেল শুনিয়ে যাই। যতদিন ওর শরীরের সামান্য অংশ থাকবে আমায় আসতে হবে”। আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না। জ্ঞান হারালাম। যখন জ্ঞান ফিরল দেখলাম সূর্য আলো ফুটেছে আমি পড়ে আছি সেই কবরস্থানে মধ্যে। হাতে রয়েগেছে সেই মালাটা, যা এখন আমার গলায় থাকে।
    
     

No comments:

Post a Comment

প্রতিবাদ ১

প্রতিবাদ ১ মিষ্টিভাষি টিভি তে দেখে শিখেছিলাম ,  শিশুশ্রমিক রাখা একটা অপরাধ। সেই কারনে কোন এক মফস্বল এলাকায় একটা শিশুকে চা দোকান...